রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

২০০ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে বাংলাদেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: কোভিড-১৯ এর মতো মহামারির মধ্যে দেশের ২০০ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে হাজার হাজার ঘর-বাড়ি। ক্ষতি প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশের সামনে আরও অনেক ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস অপেক্ষা করছে। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় নদীর তীর রক্ষায় নতুন বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি পুরনো বাঁধগুলোকে সারা বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণের তাগিদ দিলেন তারা। হঠাৎ করেই বন্যা। রাতের আধারেই সব শেষ। যা কখনো কল্পনাতেও আসেনি। সাম্প্রতিক বন্যায় এমনই অবস্থা হয়েছে নাটোরের সিংড়া পৌরসভার সুলাপুরিয়া গ্রামবাসীর। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, নিজের রক্ত ঘামে পরিশ্রম করে মাটি কেটে বাড়ি করেছিলাম এখন বাড়ি ঘর সব নদীর বুকে। 

চলতি বছর পাঁচ দফা বন্যায় এক রাতে আত্রাই নদীর পানি ঢুকে নদীগর্ভে বিলীন হয় ৪০টি বাড়ি। পানি উঠে যায় পৌরসভার নানা জায়গায়। বিগত ২০০ বছরের ইতিহাসে এমন ভয়াবহ বন্যায় কেবল নাটোর নয় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় এমন ভয়াবহ চিত্র দেখেছে দেশবাসী। নদী ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে অবকাঠামোর। নদীগর্ভে তলিয়েছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসাসহ হাজার হাজার বসতবাড়ি। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি।

রংপুরের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ বলেন, বাঁধগুলো শক্তিশালী করা হচ্ছে। অনেক প্রকল্প পাস হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এগুলো পাস হলে একবছরের মধ্যে উত্তর অঞ্চলের মানুষকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবো। 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আতিকুল হক বলেন, নতুন করে আর এক হাজার বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও এক হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। খুব  তাড়াতাড়ি আমরা এটি প্লানিং কমিশনে পাঠিয়ে দিতে পারবো। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামীতে বাংলাদেশকে এ ধরণের আরও অনেক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আতিকুল রহমান। তিনি আরও বলেন, নদী ভাঙনের দুটি বড় কারণ একটি হচ্ছে প্রচণ্ড ধাক্কা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে নদীর পারগুলোর শক্তি নেই এবং বাঁধগুলো ভেঙে গেছে। 

আগামী দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে সরকার মহাপরিকল্পনা করেছে এবং তা বাস্তবায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে বলে জানালেন এর মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ.এম. আমিনুল হক। তিনি বলেন, এই বাঁধগুলো অনেক আগের করা তখন জলবায়ুর প্রভাবের বিষয়টি ছিল না। বিভিন্ন জায়গার সমস্যা চিহিৃত করা হচ্ছে এবং সেগুলো সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা দূর করে। আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ